দ্য শেয়ার নিউজ ডেস্ক : একটি ইউটিউব চ্যানেলে (Swarup Katha) সাক্ষাতকার দিতে গিয়ে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশংসায় ভরিয়ে দিলেন দীর্ঘদিনের সাংবাদিক তথা রাজনৈতিক বিশ্লেষক সুখেন্দু বিশ্বাস (পান্না)। তিনি যা বলেন, সেটাই হুবহু তুলে দেওয়া হল পাঠকদের সুবিধার্থে। সুখেন্দু বিশ্বাস (পান্না) বলেন, ‘তৃণমূল কংগ্রেসের যে ক্যাবিনেট গত ১০ বছর ধরে চলছে, তাতে বিরল প্রজাতির মানুষ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। ভদ্র, বিনয়ী, উচ্চশিক্ষিত। তিনি কিন্তু ২০১১ সালে নির্বাচনে জিতেই মন্ত্রী হননি। মানস ভুঁইঞা ছেড়ে গিয়েছিলেন সেইসময়। তখন মানস ভুঁইঞার স্থলাভিষিক্ত তিনি হন। এরপর তিনি সেচ দফতরকে একটা অসাধারণ জায়গায় নিয়ে গিয়েছিলেন। ২০১৬ পর্যন্ত তিনি সেচ দফতরের দায়িত্বে ছিলেন। এরপর ২০১৬-তে তিনি কিন্তু বাংলার সবথেকে বেশি ব্যবধানে জয়ী প্রার্থী নির্বাচিত হন। এরপরেও তিনি অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে সেচ দফতরের কাজ করে যাচ্ছিলেন। সবচেয়ে বড় কথা হল, সেচ দফতর নিয়ে অনেক সময়ই অভিযোগ ওঠে। কিন্তু, তাঁর দিকে বিরোধীরাও কোনও অভিযোগ তুলতে পারেননি সেই সময়। এতটাই ভাল কাজ করছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ, সেই মানুষটাকেই কিনা দলীয় দফতরে বসে কর্মীদের সঙ্গে যখন মিটিং করছিলেন তথন টেলিভিশনে দেখতে হয়েছে যে তিনি আর সেচ দফতরের মন্ত্রী নেই! তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে এর থেকে দুঃখজনক আর কিছু হতে পারে বলে মনে হয় না। এটা কতবড় আঘাত। সেটা বোঝার চেষ্টা করুন। তখনই তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে, তিনি আর মন্ত্রীসভায় ফিরবেন না। কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে অনগ্রসর উন্নয়ন মন্ত্রীর দায়িত্ব দেন! তিনি সেই দায়িত্বও যথাযথভাবে পালন করেন। পরে তাঁকে বনদফতরেরও মন্ত্রী করা হয়। এরই মাঝে তিনি তাঁর নিজের হাওড়া জেলায় ক্ষতবিক্ষত হচ্ছিলেন রাজনৈতিকভাবে। শেষ তিন বছরে তিনি সেই কথা শীর্ষ নেতৃত্বকে বারেবারে জানিয়েছেন চিঠি দিয়ে। কিন্তু এত অনুনয় বিনয় করেও যখন কোনও কাজ হল না। তখন তিনি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হলেন।’

সুখেন্দু বিশ্বাস (পান্না) আরও বলেন, ‘ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেস পরিবারে বেড়ে উঠেছেন। তাঁর জ্যাঠামশাই সিদ্ধার্থ সিংহ রায়ের আমলে শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন। সুতরাং বোঝাই যায় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত অভিজাত পরিবারের সন্তান। তাই তাঁর আবেগ ছলকে উঠেছিল পদত্যাগ করতে গিয়ে। তারই পরিনাম হিসেবে তাঁর চোখ থেকে জল বেরোতে দেখলো গোটা বাংলার মানুষ। তাই রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে আঙুল তুলতে গেলে দশবার ভাবা উচিত। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আজকের সমাজে সত্যিই বাংলার গর্ব।’