সোমনাথ দাস
সকলকে গৈরিক শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন জানিয়ে স্বামী বিবেকানন্দের লাইন দিয়ে আমার লেখা শুরু করছি। ‘নিচ জাতি, মুর্খ, অজ্ঞ, মেথর, তোমরা সাহস অবলম্বন করো/ সদর্পে বলো আমি ভারতবাসী/ বলো চন্ডাল ভারতবাসী আমার ভাই।/ – ভারতীয় জনতা পার্টি এই কথায় বিশ্বাসী। তাই আমি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সবকা সাথ, সবকা বিকাশ-এ বিশ্বাসী। এবং এই পথেই চলতে চাই। আমি ভারতীয় জনতা পার্টির একজন কর্মী হিসেবে গর্বিত। প্রায়ই আমরা একটা কথা শুনি যে, বামপন্থীদের বাদ দিলে সব দলেই নাকি লবি আছে। আর আমরা ভারতীয় জনতা পার্টির সকল সদস্যরা একটাই লবি করি। সেটা মোদিজির লবি। এই লবিটা আমরা গর্বিতভাবে করি।
অনেককেই বলতে শুনি, ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের সময় আমাকে যতটা দেখা যেত, ততটা নাকি ইদানিং দেখা যায় না। তাঁদের উদ্দেশ্য বলি, আমি সবসময় সত্যের জন্য সত্যের পথে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে কাজ করে থাকি। অনেকে বলে, তাহলে কি আমি খানিকটা পিছিয়ে গেলাম? একেবারেই নয়। আমার পিছনে যাওয়াটা অনেকটা বনের রাজা সিংহের মতো অবস্থা। এক পা পিছিয়ে পড়লে, একশো পা এগিয়ে যাওয়ার কথা ভাবি। যতদিন বেঁচে থাকবো মানুষের জন্য কাজ করে যাবো। ভারতীয় জনতা পার্টি মানবজাতির সেবায় নিয়োজিত। আর মানবজাতির সেবা করতে গেলে কোনও লবি চলে না। শুধু থাকতে হয় দেশের প্রতি ভালবাসা। দেশের মানুষের প্রতি ভালবাসা। আর দরকার হয় মানুষের কাজ করার জন্য বুক ভর্তি সাহস। এটুকু থাকলেই ভারতীয় জনতা পার্টি করা যায়।
আমাদের দলটা কংগ্রেস দলের মতো নয়। যেখানে যুগ ধুগ ধরে, প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে একটা পরিবার থেকেই নেতা বেছে নিতে হয়। কখনও মা। কখনও ছেলে। কখনও মেয়ে। কংগ্রেসে এটা যদি না হতো, তাহলে প্রয়াত প্রণব মুখোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন। এবার আসি বাংলার তৃণমূল কংগ্রেসের কথায়। ৩৪ বছরের বাম নামক জগদ্দল পাথরটা সরানো যেতে পারে, এটা কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাবিয়ে তুলেছিলেন সেই সময়। কিন্তু, ১০ বছর ক্ষমতায় থাকার পর আজ তৃণমূল কংগ্রেস ধ্বংসের পথে তার কারণও সেই পরিবারতন্ত্র। সেখানেও ভাইপোকে নেতা বানাতে গিয়ে দলটা ডুবে গেল।
মোদিজি বলেছিলেন কংগ্রেসমুক্ত ভারত গড়ার কথা। এবং সেটা কিন্তু তিনি করে দেখিয়েছেন। মোদিজি এক সময়ে খুবই দরিদ্র ছিলেন। বিরোধীরা নানা সময় কটুক্তি করেছেন যে তিনি চা-ওয়ালা। কিন্তু, এটা কি দেশের গর্ব নয়? একজন চা-ওয়ালা প্রধানমন্ত্রী হতে পারেন। এটা স্বপ্ন বা অলীক কল্পনা নয়। ঘোর বাস্তব। তাহলে আজকের দিনে একজন বুথ কর্মীও ভাবতে পারেন তিনি ভাল করে কাজ করলে, তাঁরও উপরে ওঠার জায়গা রয়েছে। হয়তো আজকে আমি একটা উঁচু পদে রয়েছি। তাহলে সেখানেও আমার পদোন্নতি হবে। ভারতীয় জনতা পার্টিতে ৩ বছর ভাল কাজ করলে, ৬ বছর একটা পদে সবথেকে বেশি থাকা যায়। তারপর আপনাকে সেই পদ ছাড়তে হবে। একসময় আমাদের রাজ্যের সভাপতি ছিলেন রাহুল সিনহা মহাশয়। এখন রয়েছেন দিলীপ ঘোষ মহাশয়। এরপর হয়তো অন্য কেউ রাজ্যের সভাপতি নির্বাচিত হবেন। দিলীপ বাবুরও পদন্নতি হবে। অর্থাত, বেশিদিন ধরে আমাদের দলে এক পদে কেউ থাকেন না। আর যখন যাঁকে যা দায়িত্ব দেওয়া হয় আমাদের দলের কার্যকর্তারা সেই দায়িত্ব পালন করতে সদা প্রস্তুত। ভারতীয় জনতা পার্টিতে পদ পাওয়ার জন্য কেউ কাজ করেন না। ওই শুরুতেই বলেছি, একটাই আদর্শ আমাদের। দেশের সেবা করা। মানবজাতির সেবা করা। আর একটাই লবি। মোদিজীর লবি।
ব্যক্তিগতভাবে বলতে পারি ২০১৯-এ হয়তো বড় দায়িত্বে ছিলাম। এখন নাকি অনেকে আমাকে আগের মতো দেখতে পারছেন না। বিষয়টা একেবারেই তা নয়। আমাদের দলের প্রত্যেকেই কাজ করেন। আমাদের লক্ষ্য এখন একটাই। সোনার বাংলা গড়ার। আর সোনার বাংলা গড়তে গিয়ে হুগলী লোকসভার অন্তর্গত ৭ টি বিধানভা আমাদের মোদিজির হাতে তুলে দিতে হবে। আমাদের সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় খুব ভাল কাজ করছেন। সারা বাংলায় একজন মহিলা রাজনীতিবিদ হিসেবে তিনি ছাপ ফেলেছেন। আজ সাংসদ হিসেবেও তিনি এখানে যথেষ্ট পরিসেবা দিয়ে যাচ্ছেন। তাঁকে প্রায়ই দিল্লি যেতে হয়। এছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় তাঁকে দৌড়ে বেড়াতে হয়। তাই আমাদের প্রত্যেকের এখন একটাই লক্ষ্য চুঁচুড়া, চন্দননগর, সপ্তগ্রাম, ধনেখালি, সিঙ্গুর, বলাগড় এবং পান্ডুয়া বিধানসভা যাতে মোদিজীর হাতে তুলে দিতে পারি।
Leave A Comment
You must be logged in to post a comment.